প্রিন্ট তারিখঃ Nov 5, 2025 ইং |
প্রকাশের তারিখঃ Nov 3, 2025 ইং
দিনাজপুরে খাদ্য অধিদপ্তরের ‘উপখাদ্য পরিদর্শক’ পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক পরীক্ষার্থীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ১০টায় কসবা এলাকার কেরী মেমোরিয়াল হাইস্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষার শুরুতেই সন্দেহজনক আচরণের কারণে কৃষ্ণকান্ত রায় (২৫) নামে এক পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শহরের ফকিরপাড়া এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে আরও দুইজনকে আটক করা হয়।
আটককৃত কৃষ্ণকান্ত রায় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সিঙগুল পূর্ব রাজারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি শহরের ফকিরপাড়া স্বপ্নচুঁড়া ছাত্রাবাসে অবস্থান করছিলেন। অপর দুইজন হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার বিন্নাকুড়ি গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে মামুন (৩৫) এবং চড়কডাঙ্গা গ্রামের করুণা কান্ত রায়ের ছেলে হর সুন্দর রায় সবুজ। তারা প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার শুরুতেই কৃষ্ণকান্ত রায় বারবার কাশি দিতে থাকেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার দেহ তল্লাশি করে দুটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, ঢাকার একটি চক্রের মাধ্যমে তিনি ডিভাইস পেয়েছেন এবং পরীক্ষায় বসেছেন। চক্রের নির্দেশ ছিল, প্রশ্নের সেট ‘পদ্মা’ হলে কাশি দিতে হবে—এভাবেই চক্রটি প্রশ্নের সেট শনাক্ত করে উত্তর পাঠাত।
জালিয়াতির কৌশল সম্পর্কে কৃষ্ণকান্ত জানান, পরীক্ষা শুরুর এক থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চক্রের হাতে পৌঁছে যায়। এরপর শহরের ফকিরপাড়া ও সুইহারি এলাকার দুটি ছাত্রাবাসে অবস্থানরত কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা সেট অনুযায়ী উত্তর তৈরি করেন এবং ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠান। পরীক্ষার্থীরা শুনে শুনে উত্তরপত্রে দাগ দিয়ে ওএমআর শিট পূরণ করেন।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল, ওই কেন্দ্রে একজন পরীক্ষার্থী ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরে ১০১ নম্বর কক্ষে কৃষ্ণকান্তের আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে তল্লাশি করে ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও দুইজনকে আটক করা হয়েছে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম হাবিবুল হাসান বলেন, “জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত এক পরীক্ষার্থীকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরও দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পুরো চক্রকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
ডিবি পুলিশের ওসি মোঃ এবাদ আলী জানান, “আমরা এখনও অভিযানে রয়েছি। মামলা এখনও হয়নি, অভিযান শেষে রাতে মামলা হবে। এখন পর্যন্ত ৫টি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ও একাধিক মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়েছে।”