ঢাকা | , ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রুটিতে থেমে গেছে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ লোডশেডিং আশংকা

Time's Of Dinajpur
প্রকাশের তারিখ: Oct 25, 2025 ইং
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

ছবির ক্যাপশন: বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে দুটি বন্ধ এবং একটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারাধীন থাকায় উত্তরাঞ্চলের আট জেলা বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে। বিশেষ করে পার্বতীপুর উপজেলায় বিদ্যুৎহীনতা ও লো-ভোল্টেজের কারণে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

গত ১৬ অক্টোবর সকালে কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটের চারটি টারবাইন নষ্ট হয়ে যায়, আর ১৯ অক্টোবর রাতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রথম ইউনিটও বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ওভারহোলিংয়ের আওতায় রয়েছে। ফলে বর্তমানে কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটই উৎপাদনহীন।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, “ত্রুটির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউনিট এক সপ্তাহের মধ্যে উৎপাদনে ফিরতে পারছে না। মেরামতের কাজ চলছে।”

বড়পুকুরিয়া কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ হতো। এখন সেই সরবরাহ বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিড থেকেও উত্তরাঞ্চলে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পৌঁছাচ্ছে না। দিনাজপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে পার্বতীপুরসহ আশপাশের এলাকায়।

দিনাজপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর পার্বতীপুর জোনাল কার্যালয়ের ডিজিএম জহুরুল হক জানান, “আমাদের জোনে প্রতিদিনের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট হলেও বর্তমানে পাচ্ছি মাত্র ৬-৭ মেগাওয়াট। ফলে ৮০ হাজার গ্রাহক লোডশেডিংয়ে ভুগছেন।”

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) পার্বতীপুর কার্যালয় জানিয়েছে, শহরে বিদ্যুতের চাহিদা ৭ মেগাওয়াট হলেও বরাদ্দ মিলছে সর্বোচ্চ ৩ মেগাওয়াট। এতে নেসকোর আওতাধীন ২০ হাজার গ্রাহকও বিদ্যুৎ সংকটে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু সালেম বলেন, “একদিকে গরম, অন্যদিকে দিন-রাত সমানতালে লোডশেডিং। এমন অবস্থায় সুস্থ থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।”

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন প্রায় ৫,২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কোল ইয়ার্ডে ৪ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত রয়েছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কয়লা থাকলেও উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।

প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, “দুটি ইউনিট চালু হলে লোডশেডিং অনেকটা কমে আসবে। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে উৎপাদনে ফিরবে।”

উত্তরাঞ্চলের মানুষ এখন দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালুর অপেক্ষায়, যাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে আসে।
পোস্ট করেছেন: Time's Of Dinajpur
কমেন্ট বক্স
Time's Of Dinajpur
প্রতিবেদকের মোবাইলঃ +880

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

Done